Header Border

ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল) ২৪.৬°সে

বছরে চাঁদা নিত ১০ কোটি, দুর্দিনে পাশে নেই কোনো মালিক সমিতি

সময় সংবাদ রিপোর্টঃ  আগুনে সর্বস্বান্ত রাজধানীর বঙ্গবাজারসহ পুড়ে যাওয়া পাঁচ মার্কেটের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে নতুন করে উঠে দাঁড়াতে চান তাঁরা। কিন্তু এই দুঃসময়ে তাঁদের পাশে নেই মালিক সমিতি। অথচ ভবিষ্যৎ কল্যাণের কথা ভেবে এই সমিতিগুলোতে প্রতিবছর সাড়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই চাঁদার টাকা মালিক সমিতির নেতারা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন। এই নেতারা কেউ আওয়ামী লীগ, আবার কেউ বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যখন অর্থাভাবে দিশেহারা, তখন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, তাঁদের হাতে কোনো টাকা নেই। যে টাকাগুলো উঠেছিল, তাঁরা সেগুলো মার্কেট পরিচালনার কাজে খরচ করে ফেলেছেন।

ফুলবাড়িয়ায় পুড়ে যাওয়া মার্কেটগুলো থেকে মালিক সমিতি প্রতিবছর কেমন চাঁদা তুলত, তার একটা হিসাব করেছে সময় সংবাদ পত্রিকার অনুসন্ধানে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে সিটি করপোরেশনের নিবন্ধিত ৮৬৩টি দোকান ছিল। একইভাবে গুলিস্তান মার্কেটে ৬০০, মহানগরী মার্কেটে ৫৯৯, আদর্শ মার্কেটে ৬৭১ এবং ঢাকা সুপার মার্কেটে নিবন্ধিত দোকানের সংখ্যা ৮০২। এ ছাড়া অবৈধ দোকান ছিল ২০৯টি। পাঁচ মার্কেটের মোট ৩ হাজার ৭৪৪টি দোকান থেকে প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে চাঁদা নিত মালিক সমিতি। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১১ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা এবং এক বছরে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা চাঁদা উঠত এসব দোকান থেকে। এ ছাড়া সিঁড়ির নিচে, গলির সরু পথে বসানো অবৈধ ২০৯টি দোকান থেকে কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা করে ভাড়া উঠত, যার পরিমাণ বছর শেষে ১ কোটি ৩৪ লাখ ছাড়িয়ে যেত। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মালিক সমিতির নেতারা চাঁদা ও ভাড়ার এসব টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে আত্মসাৎ করেছেন।

গুলিস্তান মার্কেটের দোকানমালিক জুয়েল রানা বলেন, ‘আমাদের মার্কেটে বৈধ দোকান ৬০০। অবৈধ আরও ৯০টি দোকান ও অবৈধ গোডাউন ছিল। এগজস্ট ফ্যান বিলসহ সবকিছু আমরা বহন করি, সবকিছুর বিল দিই। তারপরও সব দোকান থেকে ৩০০ করে চাঁদা নেয় মালিক সমিতি। যুগের পর যুগ ধরে চাঁদা তুলে এলেও ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কোনো কাজে আসছে না তারা। সবাই ধান্ধাবাজি করে। কমিটির মেয়াদ শেষ, তারপরও তারা আছে।’

সময় সংবাদ পত্রিকার অনুসন্ধানে ৩০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়ার কিছু ডকুমেন্টও মিলেছে। এ ছাড়া প্রতিটি মার্কেটের অফিস সহকারীরা বাড়তি ৩০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এই টাকা কোথায় খরচ হয়, তা জানাতে পারেননি তাঁরা। মহানগর মার্কেটের অফিস সহকারী মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়, তবে আমি নতুন এসেছি। কী কারণে নেওয়া হতো, তা আমি বলতে পারব না।’

আদর্শ মার্কেটে তিনতলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কারখানা খুলেছিলেন মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে দোকান থেকে ৩০০ টাকা নেয়। এই টাকা কই যায়, আমরা জানি না। এত টাকা কি খরচ হয়? সব ধান্দাবাজি।’

তবে চাঁদা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মার্কেট কমিটিতে থাকা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। আদর্শ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ৩০০ টাকা করে নিতাম, সেগুলো অফিস মেইনটেন্যান্সে খরচ হতো।’ তিনি দাবি করেন, অবৈধ কোনো দোকান ছিল না। তিনতলায় একটি মসজিদ ছিল, সেখানে কারখানা ও দোকান ছিল, সেগুলো দিয়ে মসজিদের খরচ মেটানো হতো বলেও জানান।

মহানগর মার্কেটের সভাপতি লোকমান খান মার্কেটে অবৈধ দোকান থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মার্কেটে দু-একটি দোকান থাকতে পারে। সেগুলো দিয়ে মার্কেটের বিভিন্ন খরচ মেটানো হতো। তবে আমাদের বেশি আয় ছিল না। সব টাকা মার্কেটেই খরচ হয়ে যেত।’

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

জাপার নতুন মহাসচিব শামীম হায়দার
প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে পুলিশ
মতিঝিল থেকে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ শীর্ষ মাদক কারবারি গ্রেফতার
সরকার পতনের ছক আকছে আওয়ামী লীগ !
সব বিভাগে টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস
৪৪তম বিসিএসে ৪৩০টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এতে সায় দেয়নি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

আরও খবর