সময় সংবাদ রিপোর্টঃ কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে ফুল বিজু উদযাপন করছে চাকমা জনগোষ্ঠী। উৎসবে সামিল হয়েছেন ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যাসহ অন্য জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণী, নর-নারীরা। তারা পৃথিবী ও মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান এই সামাজিক আয়োজনের মূল উৎসব শুরু হয় নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়েই। পানিতে ফুল ভাসিয়ে গঙ্গা দেবীর কাছে মঙ্গল কামনা ও কৃতজ্ঞতা জানায় সবাই। শহর, নগর আর পাহাড়ি পল্লী- সব জায়গায় নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী এ উৎসব পালন করছেন পাহাড়ি জনপদের মানুষেরা।স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বুধবার (২৯ চৈত্র) চাকমা জনগোষ্ঠীর ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘হাঁড়িবসু’ আর মারমা সম্প্রদায়ে ‘সূচিকাজ’। ফুল বিজু নামে সব স্থানে অভিহিত না হলেও এইদিন প্রায় সকল পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেয়।
আজ সকাল ৭টায় ফুলবিজু উপলক্ষে শহরের রাজবাড়ীঘাট, গর্জনতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ফুল ভাসিয়ে এই উৎসব উদযাপন করেছেন পাহাড়িরা।পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ-বেদনা ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার উদ্বোধন দেখেন পাহাড়ের মানুষ। ফুল ভাসিয়ে নতুন প্রত্যয়ে বলিয়ান হয় পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা। ফুল ভাসানোর পর বাড়িতে গিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের স্নান করান তারা।
বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রান্ত-২০২৩ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বলেন, সকাল ৭টায় রাজবন বিহার থেকে র্যালি নিয়ে আমরা বিহারের ঘাটে এসে গঙ্গা দেবীকে নিবেদন করে ফুল ভাসিয়েছি। অনুষ্ঠানে প্রবীণ ব্যক্তিত্ব জ্যোতিপ্রভা লারমা, প্রকৃতি রঞ্জন টাকমা, ইন্দু লাল চাকমা ও মোহনী মোহন চাকমাসহ বিশিষ্টজনরা অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে আমরা চাকমারা পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই।
উৎসবপ্রিয় পাহাড়িরা সারা বছর মেতে থাকেন নানান অনুষ্ঠানে। তবে তার সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় বর্ষবিদায়ের এই উৎসব। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সংগ্রাই, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু এভাবে তারা ভিন্ন ভিন্ন নামে আলাদাভাবে পালন করে এই উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে এবং পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই চাকমারা একে বলা হয় ফুল বিজু।