ডেইলি নিউজ রিপোর্ট॥ জেষ্ঠ সাংবাদিক ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক শাহ আলমগীর ইন্তেকাল করেছেন(ইন্না…রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন জেষ্ঠ এই সাংবাদিক।তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত কয়েকদিন তাকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়।
সাংবাদিকদের প্রিয়মুখ শাহ আলমগীরের মৃতুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শোক প্রকাশ করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
জ্যেষ্ঠ এ সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, আগে থেকেই কিছু জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন শাহ আলমগীর। এর মধ্যে গত ২১ ফেব্রুয়ারি তার অসুস্থতা বেড়ে যায়। দ্রুত তাকে সিএমএইচে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহ আলমগীরকে দেশের বাইরে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা এ মুহূর্তে বিদেশ স্থানান্তরের মতো নয়।
এর আগে বুধবার সকালে সিনিয়র এ সাংবাদিকের আত্মীয় শাহনাজ শারমীন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, শাহ আলমগীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেছে। ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
পিআইবির প্রধানের দায়িত্ব ছাড়াও শাহ আলমগীর বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
৩৫ বছরের দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে একাধিক মুদ্রণ ও সম্প্রচার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন শাহ আলমগীর। পিআইবিতে যোগ দেয়ার আগে তিনি সর্বশেষ এশিয়ান টেলিভিশনের সিইও ও প্রধান সম্পাদক পদে ছিলেন।
উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় যোগ দেয়ার মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। এর পর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ, সংবাদ ও প্রথম আলোয়।
পরে তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক, একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শাহ আলমগীর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে তিনি অনার্স ও মাস্টার্স করেন।
সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, ‘চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ ’, ‘রোটারি ঢাকা সাউথ ভকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ এবং ‘কুমিল্লা যুব সমিতি অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ পেয়েছেন।